সামনে আগাই
কৃষিবিদ এ এইচ ইকবাল আহমেদ*
১.
নরম কাদার বুকে পরম আদরে
রুয়ে আসি ছোট চারা সোনালি ধানের।
তারপর তোলপাড় উল্লাস বানের
গিলে খায় গোড়া সুদ্ধ আগাম প্রহরে।
খায়নি আমার শুধু জমির ফসল
বাবার দিনের ঘর দাদার কবর
বেবাক নিয়েছে বানে আর দিয়ে জ্বর
শরীরের শক্তিটুকু নিয়েছে দখল।
বাজি ধরে টিকে আছি ছাড়িনি সাহস।
কত আর নিবে নিক প্রাণ যদি থাকে
তার সাথে আশাটারে নিয়ে এক ফাঁকে
পুনরায় বাঁধি বুক দুঃখ করি বশ।
জীবনের শুরু থেকে করছি লড়াই
আপদ পেছনে ফেলে সামনে আগাই॥
২.
একদা ছিলাম বনে পশুর মতন
ঝড় ঝঞ্ঝা শ্বাপদেরা তাড়া করে পিছে
উপরে সূর্যের আলো সাপ খেলে নিচে
তার মাঝে কাটিয়েছি দুরন্ত জীবন।
বাঘে টানে পালা গরু যমে টানে প্রাণ
গাছ ভেঙে ফাটে মাথা ভিমরুল নাচে
শত শত বিপদেরা ঘুরে আশে পাশে
পাহার গড়িয়ে নামে সর্বানাশা বান।
আবার মানুষজন ভিন মুল্লুকের
মারমুখী হয়ে লুট করেছে সম্পদ
নিয়ে গেছে নর নারী যা ছিল নগদ
সমস্ত নতুন করে গড়ে তুলি ফের।
এভাবে অসভ্য থেকে সভ্য দুনিয়াতে
যুথবদ্ধ যুদ্ধে টিকে আছি পেটেভাতে॥
ধানক্ষেত
খোন্দকার মো. মেসবাহুল ইসলাম**
চারদিকে সবুজের রঙ ছড়িয়ে
মাঠখানিকে বলো দিল ভরিয়ে
কচি কচি পাতারা বাতাসে দোলে
যেন তারা নিজেরা কতকথা বলে
দুষ্ট ছেলে যেমন হঠাৎ করে
লাফ দিয়ে দিয় শূন্যে উড়ে
তেমনি দমকা বাতাস ধানের পাতায়
হঠাৎ করে এসে দোলা দিয়ে যায়
দুলে উঠা পাতাতে রোদ লেগে
ঘুমে থাকা সুন্দর উঠে জেগে
ঢেউ খেলে যায় মাঠের বুকে
আমি চেয়ে থাকি মনের সুখে॥
নবান্ন
মোহাম্মদ নূর আলম গন্ধী***
মাঠের পরে মাঠ ভরেছে
সোনারাঙা ধান,
কৃষাণ-কৃষাণীর মুখে মুখে আজি
নবান্নের-ই গান!
সোনা ধানে ভরবে গোলা
মনে জাগলো খুশির বান,
কৃষাণ-কৃষাণী ভেজায় খুশি
পেয়ে নতুন ধানের ঘ্রাণ!
নতুন চালের পিঠা পায়েস মুড়ি খই
ঘরে-ঘরে হবে এবার রান্না,
নবান্নের-ই আগমনে বইছে বাংলায়
অফুরন্ত সুখের বন্যা!
*অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সী, মোবাইল: ০১৫৫৮৩০১৯০৮<ahiqbal.ahmed@yahoo.com> **উদ্যান বিশেষজ্ঞ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রংপুর অঞ্চল, রংপুর, mesbahul65@gmail.com ***উপসহকারী কৃষি অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিস, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ, মোবাইল : ০১৭১৮৭৫৩৪৮১/০১৯৪৮০২৫৮২৬